মুমতাহ তার বাসায় আনা নতুন টিভিতে একটি সিনেমা দেখল। সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধরনের চশমা ব্যবহার করলে নিজেকে সিনেমার অংশ মনে হয়। সে খুবই আনন্দিত হলো। সে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টিভি এবং সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। মুমতাহ তার এই আনন্দ অনুভূতি তার Facebook account এর মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করল।
ক. রোবটিক্স কি?
খ. ডিজিটাল বাংলাদেশ এর ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বন্ধুদের সাথে মুমতাহার আনন্দ-অনুভূতি শেয়ার বিশ্বগ্রাম ধারণা সংশ্লিষ্ট- এর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
ক. বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত যে বিষয়টি রোবটের ধারণা, নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম কিংবা ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে পারে তাই হলো রোবটিক্স।
খ. ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণকে বোঝায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণাটির মূল বিষয় হলো সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য মোচনের ব্যবস্থা করা। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকার চারটি সুনির্দিষ্ট বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে। সেগুলো হলো মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনগণের সম্পৃক্ততা, সিভিল সার্ভিস এবং দৈনন্দিন জীবনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার।
গ. উদ্দীপকে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। নিচে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা করা হলো— ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরিকৃত এমন এক ধরনের কৃত্রিম পরিবেশ, যা ব্যবহারকারীদের কাছে উপস্থাপন করা হলে এটিকে বাস্তব পরিবেশ বলে মনে হয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশ তৈরির জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারে সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হয়। সাধারণ গ্রাফিক্স আর ভার্চুয়াল জগতের গ্রাফিক্সের মধ্যে তফাত হলো এখানে শব্দ এবং স্পর্শকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যবহারকারীরা যা দেখে এবং স্পর্শ করে তা বাস্তবের কাছাকাছি বোঝানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি চশমা বা হেলমেট (HMD Head Mountained Display) ছাড়াও অনেক সময় হ্যান্ড গ্লাভস, বুট, স্যুট ব্যবহার করা হয়। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারে গ্রাফিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে দূর থেকে পরিচালনা করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। একে টেলিপ্রেজেন্স বলা হয়। এছাড়াও এ পদ্ধতিতে বাস্তবভিত্তিক শব্দও সৃষ্টি করা হয়, যাতে মনে হয়, শব্দগুলো বিশেষ বিশেষ স্থান হতে উৎসারিত হচ্ছে।
ঘ. উদ্দীপকে মুমতাহ Facebook account এর মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে আনন্দ অনুভূতি শেয়ার করে। Facebook account হলো বিশ্বগ্রাম ধারণার উপাদান বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ এর অংশ। অর্থাৎ এটি বিশ্বগ্রাম ধারণা সংশ্লিষ্ট। নিচে এর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হলো গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হলো এমন একটি পরিবেশ ও সমাজ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করাসহ বিভিন্ন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করতে পারে। বিশ্বগ্রাম ধারণায় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসিরা নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান ও আনন্দ অনুভূতি শেয়ারের মাধ্যমে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারে। Facebook account হলো বিশ্বগ্রাম ধারণা বাস্তবায়নের একটি মাধ্যম। যার সাহায্যে সারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সাথে যোগাযোগসহ বিনোদন জগতের আপডেট তথ্য, ভিডিও, ছবি খুব সহজেই পর্যবেক্ষণ করা যায়। Facebook account এর মাধ্যমে যে কেউ তার ভালোলাগা, মন্দলাগা বিষয়ে মতামত উপস্থাপন, মতবিনিময়সহ অন্যকে শেয়ার করতে পারায় বৈশ্বিক যোগাযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্বগ্রাম চেতনার সাথে তাল মিলিয়ে Facebook account এর মাধ্যমে এক দেশের মানুষ অন্য দেশের ধ্যান ধারণা, চিন্তা, সংস্কৃতির ছোঁয়ার সাথেও পরিচিত হতে পারছে।
উপরের বর্ণনার আলোকে বলা যায়, Facebook account এর মাধ্যমে মুমতাহার আনন্দ-অনুভূতি শেয়ার করার বিষয়টি বিশ্বগ্রাম ধারণারই বাস্তব প্রয়োগ, যার মাধ্যমে পুরো পৃথিবী একটি একক পরিবারে রূপ নিয়েছে। বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষকে Facebook কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।
No comments yet. Be the first to comment!